দেশে ডলার সংক’ট, কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সংকট মোকাবিলায় সরকার কমাচ্ছে ব্যয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে জোরেশো’রে প্রচারণাও চালাচ্ছে সরকার।






তবে প্রবাসীদের মনে চা’পা ক্ষো’ভ। বিদেশে দূতাবাস, পাসপোর্ট পাওয়া, বিমানবন্দরে দুর্ভোগের প্র’তিবাদে অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে হু’ন্ডিতেই টাকা পাঠাচ্ছেন। প্রবাসীরা বলছেন, সমস্যা সমাধান করলে হু’ন্ডি কমবে, বাড়বে রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশে ডলার সংক’টে দেড় মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ৫৫ পয়সা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। সংকটে মোকাবিলায় সরকার ব্যয় কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।






রফতানি বাণিজ্যের পরে রেমিট্যান্স অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রেমিট্যান্স বাড়াতে দূতাবাসগুলো প্রচারণা চালাচ্ছে। অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের যারা (প্রবাসী) টাকা হু’ন্ডির মাধ্যমে নিয়ে আসেন, তারা সবসময় বিবেকের কাছে দা’য়ী থাকবেন। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে দেশে অফিসিয়াল চ্যানেলে এসেছে ৫১ শতাংশ টাকা আর হু’ন্ডিতে এসেছে ৪৯ শতাংশ।
দেশের সংক’টে প্রবাসীদের এই আহবান জানালেও প্রবাসীদের কণ্ঠে অভিমানের সুর। প্রবাসীরা বলছেন, দেশ আর্থিক সংক’টে আছে, রিজার্ভের পরিমান কমে আসছে এজন্য প্রবাসীদের কথা মনে পড়ছে সরকারের।






কিন্তু প্রবাসীরা তো দিনের পর দিন অ’পমা’নের শি’কার, প্রত্যাশিত সেবা থেকে ব’ঞ্চিত। বাংলাদেশের বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে গা’লাগা’লি করে, কাস্টমস চো’র ধ’রার মতো আচরণ করে, মাথায় লাগেজ নিয় বিমানবন্দর থেকে বের হতে হয়। এতো দিন প্রবাসীরা নিরবে অ’পমান স’হ্য করে গেছে। দূতাবাসে গিয়েও কোন ভালো আচরণ পাওয়া যায় না। দুর্ভোগ ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া যায় না।
সংযুক্ত আরব আমিরাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন ইকবাল বলেন, হু’ন্ডিতে যারা আগে টাকা পাঠাতো, তারা এখনও পাঠায়। আর প্রবাসীদের যেসব সম’স্যা, সেগুলো আগেও ছিলো এখনও আছে। আসলে প্রবাসীরা অসহায়, তাদের কথা শোনার কেউ নেই।
প্রত্যেকে বিমানবন্দরে হয়রা’নির শি’কার হচ্ছে। প্রবাসীদের কোন চাওয়ার পাওয়া নেই, আমরা শুধু চাই আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হোক। এই পরিবর্তন হলে রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়বে। আমাদের সঙ্গে একটু ভালো ব্যবহার করলে, প্রবাসীরাও প্রতিদান দিবে।






ওমান প্রবাসী আব্দুল আলিম বলেন, দূতাবাসে, দেশে এয়ারপোর্টে,দ পাসপোর্ট অফিসে আমরা প্রবাসীরা অবহে’লিত, অ’পমা’নিত হচ্ছি। দূতাবাসের কোন কাজের জন্য গিয়ে সহযোগিতা পাই না। প্রবাসীরা ক্ষু’দ্ধ, প্রাপ্য সম্মান পেলে সবাই বৈধ পথে টাকা আরও বেশি করে পাঠাবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও এসব নিয়ে প্রবাসীদের সরব দেখা যাচ্ছে। অনেক প্রবাসী প্র’তিবাদ জানিয়ে হু’ন্ডিতে টাকা পাঠানোর কথাও বলছেন। বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রিয় সভাপতি ও জার্মানি প্রবাসী মো. কবির হোসেন বলেন, অনেকেই ক্ষো’ভ থেকে হু’ন্ডিতে টাকা পাঠান।
তাদের মূল ক্ষো’ভ বাংলাদেশে বিমানবন্দরে হ’য়রা’নী, প্রবাসে বাংলাদেস দূতাবাসে হ’য়রা’নি, পাসপোর্ট পেতে না নবায়ন করতে জটি’লতা, প্রবাসীদের লাশ সরকারি উদ্যোগে দেশে না নেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে। বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতির প্রধান সোপান রেমিট্যান্স. অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও প্রবাসীদের প্রধান সমস্যাগুলোর কোন সমাধান হয়নি। দেশের বর্তমান জিডিপিতে প্রায় ১২ শতাংশের বেশী অবদান রেখে চলা রেমিট্যান্স হয়ে উঠেছে দেশের উন্নয়ন ও মুদ্রার রিজার্ভ স্ফী’তির উল্লেখযোগ্য অংশীদার।






কবির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ দেশের প্রতিটি নাগরিকের। আমরা প্রবাসীরা অনুরো’ধ করব, প্রবাসীদের সম্মান করুন ও প্রবাসীদের সম’স্যা গুলো সমাধান করুন ও যৌক্তিক অধিকার গুলো বাস্তবায়ন করুন। প্রবাসীদের আহবান জানাচ্ছি, দেশের অর্থনৈতিক এই সংক’টে দলীয় কোন সরকার না রাষ্ট্রের পাশে দাঁড়ায় যার যার অবস্থান থেকে। ব্যাংকিং বা অফিসিয়াল চ্যানেল ব্যতিত অন্য যে কোন উপায়ে দেশে অর্থ/টাকা প্রেরন না করি ও হু’ন্ডিকে না বলি।
বিমানবন্দর নিয়ে প্রবাসীদের ক্ষো’ভ প্রসঙ্গে দৃ’ষ্টি আর্কষণ করলে বেসামরিক বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। সব সময় খোঁজ খবর রাখেন। বিশেষ করে আমাদের প্রবাসী কর্মীদের যাতে কোন ধরণের ভো’গা’ন্তির শিকার না হতে হয়। আমাদের সীমিত অবকাঠামোর মধ্য দিয়ে চেষ্টা অব্যহত আছে। আমাদের সিভিল এভিয়েশন, বিমানসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।






সিসি ক্যামেরায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। আমরা মনিটরিং করছি, যাতে অবস্থার উন্নতি হয়। লাগেজ কাটা, লাগেজ খোলা এ ধরণের কোন অভিযো’গ নেই। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাথে কথা বলেছি। কাস্টমের সাথে কথা বলেছি। যাতে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ট্রলি প্রসঙ্গে মো. মাহবুব আলী বলেন, ইতোমধ্যে দেড় হাজার নতুন ট্রলি এসেছে, আগের ট্রলিগুলো তো আছেই। আরও ট্রলি আসবে। সুতরাং ট্রলি কোন সমস্যার মধ্যেই পড়ে না। লেখা: প্রবাস সময়।