দুই বছর আগের কথা, জিনেদিন জিদান তখন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ। ফরাসি কিংবদন্তি তখন বলেছিলেন কথাটা, ‘ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বয়স মাত্র ১৮ বছর। সে রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যৎ।’ ফরাসি কিংবদন্তির কথার তাৎপর্য এই মৌসুমের শুরু থেকেই বেশ ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে, সর্বশেষ বোঝা গেল গত বুধবার।






স্প্যানিশ সুপারকাপের সেমিফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের ৩-২ গোলের জয়ে ‘নিউক্লিয়াস’ ছিলেন ভিনিসিয়ুস। গোল করার পাশাপাশি জয়সূচক হয়ে থাকা গোলটির রাস্তা খুলে দিয়েছেন বুদ্ধিদীপ্ত এক ডামিতে। ব্রাজিলিয়ান সৌরভ!
হলুদ জার্সিতে সেই সৌরভের পরশ পেতেই ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য ভিনিকে ব্রাজিল স্কোয়াডে ফিরিয়ে এনেছেন কোচ তিতে।






সংবাদমাধ্যম ‘ইএসপিএন’-এর দক্ষিণ আমেরিকান প্রতিবেদক টিম ভিকেরি ভিনিসিয়ুসকে নিয়ে তাঁর প্রতিবেদনে লিখেছেন, ২১ বছর বয়সী উইঙ্গার বৈশ্বিক এ খেলার উঠতি তারকাদের একজন। কিন্তু গত নভেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য ব্রাজিলের ২৩ জনের প্রাথমিক স্কোয়াডে রিয়াল তারকার জায়গা হয়নি।
রবার্তো ফিরমিনো চোটে না পড়লে তখন আর্জেন্টিনার মাঠে দ্যুতি ছড়ানোর সুযোগ পেতেন না ভিনি। গোলশূন্য ড্রয়ের ম্যাচেও পুরো সময় তটস্থ রেখেছিলেন আর্জেন্টাইন রক্ষণকে। সেই পারফরম্যান্সের পর এবার ভিনিকে স্কোয়াডের বাইরে রাখার বিলাসিতা দেখাননি তিতে।
ব্রাজিল কোচের মতো না হলেও ভিনিকে নিয়ে অন্য রকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। সম্প্রতি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দারুণ খেলছেন ভিনিসিয়ুস। অভিযোগ উঠেছে, আনচেলত্তির রিয়াল ব্রাজিল উইঙ্গারের ওপর নির্ভরশীল।






ইতালিয়ান কোচকে এ অভিযোগ খণ্ডন করতে সাতপাঁচ বোঝাতে হচ্ছে সংবাদমাধ্যমকে। তাতে অবশ্য তেমন লাভ হচ্ছে না। গত ২৯ ডিসেম্বর ভিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে রিয়াল স্কোয়াডের বাইরে চলে যান। এরপর ভীষণ ভুগেছে আনচেলত্তির দল। ২ জানুয়ারি হেতাফের কাছে হারে ১-০ গোলে।
কিন্তু ছয় দিন পরই ভিনি দলে ফিরে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয় এনে দেন রিয়ালকে, ম্যাচে ২টি গোল করেছেন তিনি। সে ম্যাচের পর ভিনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন আনচেলত্তি। ব্রাজিলিয়ান তারকার সহজাত ড্রিবলিং কিংবা পায়ের কারুকাজ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। কিন্তু মন্তব্যটা বুঝিয়ে দেবে রিয়াল আক্রমণভাগে ভিনিসিয়ুসের প্রভাব, ‘সে এমনভাবে জোড়া গোল করেছে যেন সে দলের সেন্টার ফরোয়ার্ড।’






অথচ ভিনি খেলেন বাঁ প্রান্তের উইংয়ে। বল পেয়ে এখান থেকে দৌড়ে বক্সে ঢোকাটা তাঁর সহজাত খেলা। সেখানে করিম বেনজেমা-মার্কো আসেনসিওরা থাকলেও আলাদা করে নজর কাড়ছেন ভিনি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ভিনির গোল করার ক্ষুধা আগের তুলনায় বেড়েছে। গোলের গন্ধও এখন পাচ্ছেন ভালোই। তীব্র গতি ও পায়ের কারুকাজে ডিফেন্ডারদের ছিটকে ফেলা তাঁর সহজাত হলেও আগে ফিনিশিংয়ে সমস্যা ছিল তাঁর। সাম্প্রতিক সময়ে খেলা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এ সমস্যা এখন অতীত হওয়ার পথে।